শেখ নাসির উদ্দিন,খুলনা প্রতিনিধি: অবশেষে সড়ক অবরোধের পর খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত মায়ের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে এবং থানায় আটক দুই ছেলে মো. তরিকুল ইসলাম কাবির ও সাদ্দাম হোসেনকেও ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টায় খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে মায়ের মরদেহ আটকে রেখে দুই ছেলেকে পুলিশে দেয় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মহানগরীর দৌলতপুরের পাবলা কারিকর পাড়ার মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকের (৬৭) স্ত্রী পিয়ারুন্নেছা (৫৫) শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে মায়ের মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগ এনে ইন্টার্ন চিকিৎসক কামরুল হাসানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে ছেলে মো. মোস্তাকিমের। এ ঘটনায় পিয়ারুন্নেছার অপর দুই ছেলেকে আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেন চিকিৎসকরা।
ঘটনার ১৩ ঘণ্টা পর আজ রবিবার (১০ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত পিয়ারুন্নেছার লাশ হস্তান্তর করেছে এবং সোনাডাঙ্গা থানায় আটক তার দুই ছেলেকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। মাওলানা আব্দুর রাজ্জাকের প্রতিবেশি আলফাত হোসেন লিটন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মায়ের লাশ ও আটক ছেলেদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে দুপুর ৩টা থেকে সাড়ে ৩টায় মহানগরীর নতুন রাস্তার মোড়ে খুলনা-ঢাকা মহাসড়ক আধাঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলাম এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে। সড়ক অবরোধের সময় আটকদের নি:শর্ত মুক্তি ও লাশ ছেড়ে না দিলে দুর্বার আন্দোলনের হুশিয়ারী দেওয়া হয়। এরপর থানা পুলিশ আমাদের ডেকে আটককৃতদের ছেড়ে দিয়েছে। এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ হস্তান্তর করেছে। এর আগে মৃত পিয়ারুন্নেছার স্বামী মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামছুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্সসহ পরিবারের সদস্যরা খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের কাছে গিয়েও কোন লাভ হয়নি। মুক্তি পাওয়ার পর মো. তরিকুল ইসলাম কাবির বলেন, রাতে মা ছটফট করতে থাকে। আমার ভাই বার বার যাওয়ার পরও ইন্টার্ন ডাক্তার আসেনি। মাকে সাথে নিয়ে তার রুমে আসতে বলে।
হাসপাতালে থাকা অন্যান্য রোগীর স্বজনরা অনেক অনুরোধ করার পর ডাক্তার মাকে দেখতে আসেন। কিন্তু মাতো ততক্ষনে মারা গেছেন। এরপর আমার ছোটভাই উত্তেজিত হয়ে ডাক্তারদের সাথে বাকবিতন্ডায় জাড়ায়। পরে এসে ছোট ভাইয়ের পক্ষ থেকে আমি ও আমার আরেক ঢাকা থেকে আসা অসুস্থ ভাই মাফ চাই। কিন্তু তারা আমার অসুস্থ ভাইটিকেও মারধোর করে। এমনকি আমার বৃদ্ধ বাবাকেও ইন্টার্নী টিকিৎসকরা মারধোর করে। পরে অন্যায়ভাবে আমাদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়। যারা আমার মায়ের লাশ ও আমাদের ছাড়ানোর জন্য কষ্ট করেছেন, আন্দোলন করেছেন তাদের প্রতি আমি ও আমার পরিবার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।